একদিন আমি বুড়ো হবো।
চামড়াঝোলা, দন্ত্যহীন, শ্বেত-চুলের বৃদ্ধ কাক-
কতো শতো তোপধ্বনিতেও পড়ে রবো নির্বাক।
একদিন আমি বুড়ো হবো।
ষোড়শী যুবতীর এককালের দুর্দান্ত প্রেমিক-
মাঠ কাঁপানো সেই শক্তিময় খেলোয়াড়,
অসি-মসি তে ঝড় তোলা সেই বিখ্যাত-অবিখ্যাত বীর-
হারাবে সব, থেমে যাবে মোর তলোয়ার।
একদিন আমি বুড়ো হবো।
ধরণীর বুকে বাড়বে কত অনাসৃষ্টি- কত অনাচার,
ঝাপসা নয়নে দেখবো সব-
শিরায় শিরায় বওয়া দুই-চারটে রক্তকণিকায় ঝড় উঠবে হয়তো-
তবু পড়ে রবো নিস্তেজ, অসাড়, আর নিরব; কারণ-
একদিন আমি বুড়ো হবো।
আকাশের বুকে সামান্য বিদ্যুৎ খেল দেখে-
ভয়ে কাঁপবো থরথর,
বাঁধা পেরিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো সেই রোমাঞ্চকর ইচ্ছাটা-
হয়তো থাকবে না আর।
একদিন আমি বুড়ো হবো।
বেঁকে যাবে দেহ-যৌবন দু'য়েরই মেরুদণ্ড,
যৌবনের সেই সমঝদারিতা আর শালিস
কাঁপানো সব সিদ্ধান্ত -
সব হারাবে, শিশুর মতো বুঝ হবে মোর-
অবুঝের মতো হেসে যাবো কেবল, বুঝবো না আদি কিবা অন্ত।
একদিন আমি বুড়ো হবো-
তৃপ্ত-অতৃপ্ত হৃদয় নিয়ে-
রোজ মৃত্যুর দিন গুনে যাবো,
হেলায়-অবহেলায়, যত্নে-কিবা অযত্নে
আমায় নিয়ে খেলবে আমার সন্তানেরা,
ভাবনায় ডুব দিয়ে ভাববো কিসব-
গলদ সূত্রে কষবো কেবলই জীবনের হিসাব।
ইচ্ছা-অনিচ্ছা, কামনা বাসনা সব হারাবে,
দিনের সুরুজ আর রাত্রির চাঁদ, ঠিক রবে সব-
কেবল ক্ষয়ে যাবো আমি; কারণ-
একদিন আমি বুড়ো হবো।
-আচার্যনন্দন (মোঃ জহির রায়হান)
১৯.০১.২০১৯
Comments